Wednesday - 2 April, 2025 +10 344 123 64 77

Tuesday, March 09, 2010

হঠাৎ আবিষ্কার- আবিষ্কারের পিঠেই আবিষ্কার- পর্ব দুই




গত পর্বে আপনাদের জানিয়েছিলাম সুপার গ্লু, পোস্ট ইট নোটস, স্কচগার্ড, ভেলক্রো মত কয়েকটা জিনিসের আবিষ্কারের কাহিনী। আজও ঠিক সেরকম দুইটি জিনিসের আবিষ্কারের পেছনের কথা আপনাদের জানাব।

পেনিসিলিন

আলেকজান্ডার ফ্লেমিং ছিলেন ছিলেন এক জন বৃটিশ ব্যাকটেরিওলজিস্ট। ১৯২৮ সালে তিনি পেনিসিলিন আবিষ্কার করেন। অবশ্য ঐ সময় তিনি কিন্তু সম্পূর্ন অন্য বিষয় ফ্লুর জন্য গবেষনা করছিলেন পেনিসিলিনের বিষয়টা তার মাথাতেই আসেনি। জীববিজ্ঞান গবেষনাগারে পেট্রি ডিশ (Petri Dish) বলে এক ধরনের থালা থাকে যা সাধারনত ব্যাকটেরিয়া উৎপাদনে কাজে লাগে।
ফ্লেমিং একদিন খেয়াল করলেন যে তার পেট্রি ডিশগুলোর মধ্যে ডিশের ছাচে নোংরা আবর্জনায় ভরে গেছে। অন্য কোন বিজ্ঞানী হলে এধরনের নোংরা ফলাফল ধ্বংস করে ফেলতেন।কিন্তু আলেকজান্ডার ফ্লেমিং সেটা করেননি কারন তিনি এর গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিলেন।

এই নোংরা বস্তু যাই হোক না কেন এটা স্ট্যাফিলোকক্কাস গুলো (Staphylococcus) ধ্বংস করে ফেলেছিল। স্ট্যাফিলোকক্কাস হল এক ধরনের অনুজীব, এরা প্রচন্ড উত্তপ্ত হওয়া থেকে আরম্ভ করে টক্সিক শক সিন্ড্রোমের  (Toxic Shock Syndrome) জন্য দায়ী। অবশেষে নীলচে সবুজ ধরনের এ মোল্ডকে তিনি ফাংগাস গোত্রের  পেনিসিলিয়াম নোটাটাম (Penicillium Notatum) হিসেবে চিহ্নিত করেন যার কেমিক্যাল স্টাফের জন্য আদতে যমদূতের মত কাজ করেছিল। যেহেতু কেমিক্যালটি ফাংগাস গোত্রের  পেনিসিলিয়াম নোটাটাম থেকে উৎপন্ন হয়েছিল তাই ফ্লেমিং এর নাম দিলেন পেনিসিলিন।

দুর্ভাগ্যক্রমে প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন পেনিসিলিন খুব বেশি দীর্ঘস্থায়ী বা কার্যকর ছিল না। তবে এটি আবিষ্কারের ৩ বছর পর অক্সফোর্ডের দুজন রিসার্চার পেনিসিলিনের  স্থায়ী কার্যকারি অবস্থায় নিয়ে আসতে সক্ষম হন। আর বর্তমানে বিভিন্ন রোগে প্রতিরোধে এই অ্যান্টিবায়োটিক এক অনন্য ভূমিকা পালন করে।


সেলোফেন

সেলোফেন নাম শুনেই চমকে ওঠেন এ আবার কি জিনিস। কিন্তু ঘরে বাহিরে প্রতিদিন আমরা এই সেলোফেন ব্যবহার করছি !! আমরা আসলে একে চিনি রাপিং পেপার (wrapping paper)   হিসেবে। প্রায়ই আমরা নানান কাজে বাজার থেকে বাহারি রঙের সেলোফেন কিনে থাকি। আসুন জেনে নেয়া যাক এই সাধারন জিনিসটির আবিষ্কারের ঘটনাটি।
ঘটনার পটভূমি ১৯০৮ সালের প্রান্তিলগ্ন। ফরাসী এক টেক্সটাইল ফার্মের এক প্রতিভাবান কেমিস্ট জ্যাক ব্র্যান্ডেনবার্জার(Jacques Brandenberger)। দাগনিরোধোক টেবিলক্লথ বানানোর জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। সিনথেটিক টেক্সটাইলের ফাইবার তৈরির জন্য রেয়ন নামের এক ধরনের সেলুলোজ ব্যবহৃত হয়। একে ভিসকোস (Viscose) ও বল হয়।কাপড়কে দাগনিরোধক করার জন্য এর ভিসকোসের পাতলা আবরন তৈরি করলেন। বৃথাই করলে সব জ্যাক ব্র্যান্ডেনবার্জার মানুষে মন জয় করতে পারল না এটি।

জ্যাক ব্র্যান্ডেনবার্জার এবার নতুন করে ভাবলেন তার আবিষ্কৃত সেলোফেনকে তিনি খাবারের মোরক হিসেবে ব্যবহারের চিন্তা করলেন যেহেতু এটি পানিনিরোধক। তবে এর পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে লেগে ছিল প্রায় দশ বছর।  

সেলোফেন উৎপাদন উপযোগী মেশিন তৈরি করতে এতদিন সময় লেগেছিল। এর পরই জনসমক্ষে পরিচিতি পায় সেলোফেন ওরফে রাপিং পেপার।

সংগ্রহীতঃ যায়যায়দিন
 

0 comments:

Post a Comment