Wednesday - 2 April, 2025 +10 344 123 64 77

Monday, March 15, 2010

শক্তিশালী দুর্গগুলো আজও মাথা উচু করে দাড়িয়ে আছে অতীতের গৌরবের সাক্ষী হয়ে

মধ্যযুগীয় রাজার ছিলেন খুবই প্রতাপশালী এবং ক্ষমতার অধিকারী। তাদের এই শক্তির মূল উৎস ছিল শক্তিশালী ও সুরক্ষিত প্রাসাদ দূর্গ। দুর্ভেদ্য এই সব প্রাসাদ দূর্গে বসেই তারা তাদের সুবিশাল সম্রাজ্য শাসন করতেন। একেবারে প্রথম দিকে প্রাসাদ দূর্গ তৈরি করা হত কাঠ দিয়ে। আমাদের উপমহাদেশীয় ইতিহাসে তিতুমীরের বাঁশেরকেল্লা বীরত্বের এক গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য বহন করছে। তিতুমীরের বাঁশেরকেল্লাটি হয় তো সুরক্ষিতর দিক দিয়ে কিছুই না কিন্তু ইংরেজদের অত্যাচার আর বৈসম্যের বিরুদ্ধে মানুষের মনে বিদ্রোহের যে দুর্গ গড়েছিল তা যে কোন পাথরের দুর্গের চেয়েও শক্তিশালীকরেছিল, এই দেখ কোথা থেকে কোথায় চলে গেছি। তো এবার প্রসঙ্গে ফেরাযাক, দশম শতাব্দীতে পাথর ব্যবহার করে দুর্গ গুলো তৈরির প্রচলন শুরু হয়। এসব দুর্গগুলোর একদম মধ্যখানে থাকতো ‘কিপ’। কিপ হচ্ছে উঁচু আবাসিক ভবন বা টাওয়ার।কাপ হল একটি উঁচু আবাসিক টাওয়ার। মাঝেমধ্যে এই টাওয়ার ২০০ ফুট পর্যন্ত উঁচু করা হত। আর দুর্গের দেয়াল গুলো হত ১২ ফুট পুরু। সেখানে রাজা তার পরিবার ও সভাসদ দের নিয়ে থাকতেন এবং রাজ্য পরিচালনা করতেন। কিপের চারপাশে থাকতো একটি অথবা দুইটি বৃত্তাকার দেয়াল। মধ্যযুগীয় এই সব দুর্গগুলো এমন ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে বন্ধুরা ও মিত্ররা অবাধে যাওয়ার সুযোগ পেত।কিন্তু শত্রুদের ক্ষেত্রে দুর্গে প্রবেশ করা এক কথায় অসম্ভব ছিল। দুর্গের প্রবেশ মুখে থাকতো একটি গেটহাউজ বা ফটকঘর। এই ফটকঘরের প্রচলিত নাম ‘বারবিকান’। দুর্গে কেউ প্রবেশ করতে চাইলে আগে তাকে অস্ত্র সমর্পণ করতে হত যদি সঙ্গে অস্ত্র থাকতো। আর তারপর পেরিয়ে যেতে হত ড্র-ব্রিজ। এই ‘ড্র-ব্রিজ’ হল এক ধরনের সেতু, যা ইচ্ছে মত নামানো অথবা উঠিয়ে রাখা যায়। ড্র-ব্রিজের নিচে থাকতো পানিভর্তি পরিখা। ড্র-ব্রিজের পেছনে আবার বিশাল লোহার গেট যা কিনা ‘পোর্ট কালিস’ নামে পরিচিত ছিল। মুহূর্তের মধ্যে লোহার গেট ফেলে বন্দ্ধ করা যায় দুর্গের ফটক। দুর্গের দেয়ালগুলোর উপরে দাড়িয়ে থাকার ও হাটার ব্যবস্থা ছিল। সেখান থেকে সৈন্যরা তীর, বা পাথর ছুড়ে মারতে পারতো। এই অবস্থান টাকে বলা হত ‘প্যারাপিট’।সেখান থেকে শত্রুর উপর গরম তেলও ঢালা হতো। আজ আপনাদের কিছু বিখ্যাত প্রাসাদ দুর্গ সর্ম্পকে বলব।

রোচেস্টার দুর্গ (Rochester castle):
ইংল্যান্ডের এই দুর্গটি তৈরি হয়েছিল ১০৮৭ সালে।দুর্গটির প্রাসাদটি ছিল ১১৩ ফুট উঁচু, কোণের মিনরগুলো আরো ১২ ফুট উঁচু। দেয়ালগুলোর পুরুত্ব প্রায় ১২ ফুট।শত্রুদের উপর  তীর বা পাথর ছুড়ে মারার জন্য একটি কাঠের মঞ্চ আছে দুর্গের মাথায়।
১২১৫ সালে দুর্গের আসল অধিপতি রাজা জন শত্রুর হাত থেকে পুনরুদ্ধার করেন এই দুর্গ।

হারলিক্ দুর্গ (Harlick castle):
১২৮৫ সালে এই প্রাসাদটি গড়া হয় ওয়েলস এ। এই প্রাসাদদুর্গের ভেতরকার উঁচু দেয়াল বাহিরকার নিচু দেয়াল ছাড়িয়ে গেছে।দুটো পোর্টকালিস বা লোহার কপাট রয়েছে এই প্রাসাদদুর্গে।
১২৯৪ সালে এই প্রাসাদদুর্গের মাত্র ৩৭ সৈন্য আটকে রেখেছিল গোটা ওয়েলস বাহিনীকে।

ওয়ার উইক (Warwick castle):  
ইংল্যান্ডের এই প্রাসাদদুর্গটি গড়া হয়েছে ১৩৯৪ সালে। লম্বা দুইটি টাওয়ার রয়েছে দুর্গটির সুরক্ষাব্যবস্থা জোড়দার করার জন্য। একটি টাওয়ারের নাম সিজার্স টাওয়ার। ছয়তলা এই টাওয়ারের মাথায় রয়েছে দুই দুটি প্যারাপিট। ওপর টাওয়ারের নাম গাইস টাওয়ার, পঞ্চম তলা বিশিষ্ট এই টাওয়ারে রয়েছে একটি প্যারাপিট।
আর টাওয়ার দুটি একটি বিশাল ড্র-ব্রিজের মাধ্যমে সংযুক্ত।
সংগ্রহীতঃ অন্যআলো

0 comments:

Post a Comment